রিয়াল মাদ্রিদ পয়েন্ট হারাবে, আর করিম বেনিজেমা সেটা চেয়ে চেয়ে দেখবেন, এটা হয় নাকি! গত মৌসুমের শেষ দিকে লিগে তো বটেই, বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস লিগে ফরাসি স্ট্রাইকার হয়ে উঠেছিলেন রিয়ালের ত্রানকর্তা। ড্র করতে চলা কিংবা হারতে বসা কতগুলো ম্যাচে যে রিয়ালকে জিতিয়েছেন বেনজেমা। যার পুরস্কার কয়েকদিন আগে পাওয়া উয়েফার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের ট্রফি।
এই মৌসুমেও হয়তো বেনজেমাকেই দেখা যাবে, এমন একটা আভাস মিলেছে আজ। এসপানিওলের মাঠে যখন ড্র করে পয়েন্ট হারাতে বসেছিল রিয়াল, ঠিক সেই মুহূর্তে জ্বলে উঠলেন ফরাসি স্ট্রাইকার। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচের শেষ দিকে তাঁর জোড়া গোলেই ৩-১ ব্যবধানে জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
শেষ মুহূর্তের গোল তো আছেই, ম্যাচে এমনিতেও নাটকীয়তার কমতি ছিল না। এসপানিওল একমাত্র যে গোলটা পেয়েছে, সেটাই যেমন এসেছে সৌভাগ্যক্রমে। একেবারে কাছ থেকে নেওয়া স্প্যানিশ স্ট্রাইকার হোসেলুর শট রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার হাতে এবং পরে পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি শটও সেই হোসেলুই নিলেন, এবার আবার পোস্টে লেগে বল ঢুকে যায় রিয়ালের জালে। কোর্তোয়ার আসলে সেখানে কিছুই করার ছিল না।
এটা ম্যাচের ৪৩ মিনিটের ঘটনা। ওটা ছিল এসপানিওলের সমতা ফেরানো গোল, কারণ রিয়াল এগিয়ে গিয়েছিল ১২ মিনিটেই। শুরু থেকেই বলের দখল রেখে এসপানিওলকে চাপে রেখেছিলেন আনচেলত্তির শিষ্যরা। তবে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের বড় পরীক্ষা সেই অর্থে নিতে পারেননি।
এসপানিওনের গোলমুখে প্রথম শটটা নেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, সেটাতেই আসে গোল। ভালভার্দের সঙ্গে দারুণ ওয়ান-টু খেলে চুয়ামেনি বল বাড়ান ভিনিকে। ব্রাজিল ফরোয়ার্ড ভুল করেননি।
বিরতির পর নিজেদের কিছুটা গুছিয়ে নেয় এসপানিওল। বেশ কয়েকটা আক্রমনও করে। তবে ফিনিশিং ভালো না হওয়ায় ফল আসছিল না। হোসেলু তো ৬০ মিনিটের দিকে দারুণ একটা সুযোগই পেয়েছিলেন। কিন্তু কোর্তোয়া বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। দ্বিতীয় গোলটা তাই হতে হতেও হলো না এসপানিওলের।
রিয়ালের আক্রমন গতি পায় মূলত ভালভার্দেকে তুলে রদ্রিগোকে নামানোর পর। একই সময়ে মদরিচের বদলে আনচেলত্তি নামান কামাভিঙ্গাকে। রিয়ালের অনেক কাঙ্খিত গোলটা আসে রদ্রিগোর পাস থেকেই। ৮৯ মিনিটে তাঁর ক্রস থেকে দলকে এগিয়ে দেন বেনজেমা।
তবে এসপানিওলের আরসিডিই স্টেডিয়ামে নাটক সেখানেই শেষ হয়নি। যোগ হওয়া সময়ে ডি-বক্সের বাইরে এসে রিয়াল মাদ্রিদের দানি সেবাইয়োসকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন এসপানিওলের গোলরক্ষক লুকুম্পতে। ফ্র-কিক পায় রিয়াল। ততক্ষণে নির্ধারিত ৫ বদলির কোটা শেষ করে ফেলেছেন এসপানিওল কোচ দিয়েগো মার্তিনেজ। বাধ্য হয়ে তাই অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার লিয়ান্দ্রো কাবরেরাকে গ্লাভস হাতে দাঁড়াতে হয় গোলবারের নিচে। তাতে লাভ হয়নি কিছুই। বেনজেমার শট ঠেকানোর সাধ্যই ছিল না তাঁর। এই মৌসুমে লা লিগায় এ নিয়ে ৩ গোল হলো ফরাসি স্ট্রাইকারের।
দুর্দান্ত জয়ের পর লা লিগার পয়েন্ট তালিকায়ও শীর্ষে রিয়াল। ৩ ম্যাচে ৩ জয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৯। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়েও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে দুই নম্বরে রিয়াল বেতিস।