ব্রিস্টলে ঝড় বয়ে গেল বোলারদের ওপর দিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ডের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বিধ্বংসী ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়েছে দুদলই। তাতে অবশ্য বড় ব্যবধানেই জয় পেয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। জনি বেয়ারস্টো, মঈন আলি ও দাউইদ মালানের তাণ্ডবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪১ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড।
বুধবার (২৭ জুলাই) টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ড জনি বেয়ারস্টো, মঈন আলী ও দাউইদ মালানের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রানের বিশাল সংগ্রহ পায়। জবাব দিতে নেমে ত্রিস্তান স্টাবসের দারুণ ইনিংসের পরও নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানে থামে প্রোটিয়ারা। এদিন ইংল্যান্ডের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়েছেন অলরাউন্ডার মঈন আলি। মাত্র ১৬ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন তিনি।
আগে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ডের হয়ে এদিন শুরুতেই ঝড় তোলেন অধিনায়ক জস বাটলার। তবে সে ঝড় স্থায়ী হয় মাত্র ৭ বল। ২ চার ও ২ ছয়ে ২২ রান করে বিদায় নেন তিনি। তার উইকেটটি নেন লুঙ্গি এনগিডি। আরেক ওপেনার জেসন রয়ও বিদায় নেন ১৫ বলে ৮ রান করে।
চমৎকার খেলছিলেন দাউইদ মালানও। ২৩ বলে ৪৩ রান করে তিনিই বিদায় নেন ফেলুকায়োর বলে। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।
১২তম ওভারে ১১২ রানবে তৃতীয় উইকেট হারানো ইংলিশদের ইনিংসের বাকি গল্পটা বেয়ারস্টো আর মঈনের। দুজন মিলে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দেন। বিশেষ করে আন্দিলে ফেলুকায়ো ও তাবরেইজ শামসির ওপর দিয়েই গেছে সবচেয়ে বেশি ঝড়। মাত্র ৩৫ বলে মঈন-বেয়ারস্টো গড়েন ১০৪ রানের পার্টনারশিপ। দুজনের মধ্যে মঈনই বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন। ১৬ বলে অর্ধশতক তুলে নেওয়া অলরাউন্ডার শেষ পর্যন্ত ১৮ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে এনগিডির শিকারে পরিণত হন। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ২ চার ও ৬ ছক্কায়।
মঈন আউট হলেও সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন বেয়ারস্টো। শেষ বলের আগের বলে আউট হওয়া এই ব্যাটার ৫৩ বলে খেলেন ৯০ রানের ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ৮টি ছয়ের মার। এই উইকেটটিও যায় এনগিডির দখলে। এদিন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেটের দেখা পান এনগিডি। ৪ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে তিনি ৫ উইকেট শিকার করেন।
এদিন ফেলুকায়ো তার করা চার ওভারে দেন ৬৩ রান। এ ছাড়া শামসি ৩ ওভারে দেন ৪৯ রান। একটি ওভার বল করে ২০ রান দেন ত্রিস্তান স্টাবস।
২৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এদিন ব্যর্থ প্রোটিয়া টপঅর্ডার। ৭ রান তুলতেই আউট হয়ে ফেরেন কুইন্টন ডি কক ও রাইলি রুশো। দুজনকে ফিরিয়ে দ্রুত ধাক্কা দেওয়ার কাজটা করেন রিস টপলে। টবে রিজা হেনড্রিকস ও হেনরিখ ক্লাসেন মিলে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে হু হু করে বাড়ছিল আস্কিং রানরেট। পাল্লা দিতে গিয়ে দলীয় ৭২ রানে আদিল রশিদের শিকারে পরিণত হন ২০ রান করা ক্লাসেন। দলীয় ৮৬ রানে মঈন আলির বলে বিদায় নেন ৩৩ বলে ৫৭ রান করা হেনড্রিকসও। তার ইনিংসে ছিল ৯টি চার ও একটি ছয়ের মার।
প্রোটিয়াদের হয়ে এরপর একাই চেষ্টা করে গেছেন ২১ বছর বয়সী উইকেটকিপার ব্যাটার ত্রিস্তান স্টাবস। রীতিমত তুলোধুনো করেছেন ইংলিশ বোলারদের। মাত্রই ক্যারিয়ারের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে ২৮ বলে খেলেছেন ৭২ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস। ২ চার ও ৮ ছয়ে সাজানো তার ইনিংসটি থামে গ্লেসনের বলে জেসন রয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
শেষদিকে ১৭ বলে ২২ রানের একটা ইনিংস খেলেন ফেলুকায়ো। এ ছাড়া আর কেউই করতে পারেননি বলার মতো রান। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৯৩ রানে থামে প্রোটিয়াদের ইনিংস।
ইংল্যান্ডের পক্ষে ৫১ রানে ৩ উইকেট নেন গ্লেসন। মাত্র ২৯ রানে ২ উইকেট নেন রিস টপলে। এ ছাড়া ২ ওভার বল করে ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। বাকি উইকেটটি যায় মঈন আলীর দখলে।
সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় মাঠে গড়াবে।