আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ নাকি তিনি মোটেও উপভোগ করতে পারেননি। নিজেকে প্যাসেঞ্জারের সিটে মনে হয়েছে সাকিব আল হাসানের নিজেকে।
কয়েকদিন আগে দুবাইতে একটি জিজ্ঞাপনের কাজে যাওয়ার পথে বিমান বন্দরে মিডিয়ার সামনে এমনটাই বলেছিলেন সাকিব।
ওই সময়ই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন মানসিক এবং শারীরিকভাবে অবসাদগ্রস্থ। খেলার মত অবস্থায় নেই তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও যেতে চান না।
এরপর বিসিবি থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানিয়ে দেন বিশ্রাম চান। দক্ষিণ আফ্রিকা যেতে পারবেন না। বিসিবিও তাকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্রাম দিয়েছিল।
কিন্তু দুবাই থেকে ফেরত এসে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে বৈঠকের পর সাকিব নিজেই ঘোষণা দেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাচ্ছেন। জোহানেসবার্গের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে বিমান বন্দরে সাকিব বলে গেলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় অন্তত একটি ম্যাচ হলেও জিততে চান তারা।
বৃহস্পতিবার ম্যাচের আগেরদিন তামিম ইকবাল জানিয়েছিলেন, সাকিব পুরোপুরি প্রস্তুত। দলের অন্যরা যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, সাকিবও এই ম্যাচে মাঠে নামার জন্য সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে মুখিয়ে আছে।
অবশেষে সেঞ্চুরিয়নের সুপার স্পোর্টস পার্ক মাঠে সাকিব মাঠে নামলেন, খেললেন এবং জয় করলেন। তার ব্যাটই ছিল সবচেয়ে বেশি সরব।
তামিম-লিটন ৯৫ রানের জুটি গড়ার পর মাঠে নেমে সাকিব ৬৪ বলে খেললেন ৭৭ রানের অনবদ্য ইনিংস। কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি কিংবা মার্কো জানসেনদের বল মোকাবেলা করে ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কা মারেন তিনি।
সাকিবের এমন অনবদ্য ব্যাটিংয়ের পর বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ালো ৩১৪ রানের। ইয়াসির আলি রাব্বির সঙ্গে সাকিব গড়েন ১১৫ রানের জুটি। এই জুটিটিই বড় স্কোর গড়তে সাহায্য করেছে বাংলাদেশকে।
বল হাতে সাফল্য পাননি সাকিব। ১০ ওভার পুরো বল করে ৫৪ রান দিয়েছেন। তবে, তাসকিন, শরিফুল আর মিরাজরা বোলিংয়ের এই ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছেন। দুর্দান্ত এক জয় উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশকে।
কিন্তু নিজেকে প্যাসেঞ্জার মনে হওয়া সাকিব যখন ড্রাইভিং সিটে বসে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে ফেলেন, তখন তাকেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার না দিয়ে উপায় থাকে না। তিনিই হলেন ম্যাচ সেরা।
সবচেয়ে বড় কথা, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ দেখায়ও জিতেছিল বাংলাদেশ এবং ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেটা ২০১৯ বিশ্বকাপে লন্ডনের ওভালে। ব্যাট হাতে ওইদিন করেছিলেন ৭৫ রান এবং বল হাতে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। বাংলাদেশের ৩৩০ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা করেছিল ৩০৯ রান। বাংলাদেশ জিতেছিল ২১ রানের ব্যবধানে।