ইয়াসির আলীর ড্রাইভ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। এই ব্যাটসম্যানের শক্তির জায়গা তো এখানেই। কাভার ড্রাইভ, স্ট্রেট ড্রাইভ ও অন ড্রাইভে বোলারের ওপর আধিপত্য দেখানোর ক্ষেত্রে ইয়াসির তরুণ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অনন্য। আজ সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ইয়াসির মুগ্ধতা ছড়ালেন পুল ও ফ্লিক শটে।
দারুণ সব শটে সাজানো ইয়াসিরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকে ছিল মনে রাখার মতো বেশ কিছু মুহূর্ত। ৪৪ বলে ৫০ রান করার পথে প্রোটিয়া পেসার আন্দিলে ফিকোয়াকে পুল শটে ছক্কা মেরেছেন। মারকো ইয়ানসেন শর্ট বল করে ইয়াসিরকে ভয় দেখাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকেও ইয়াসিরের পুল শটে বাউন্ডারিতে আছড়ে ফেলেছেন। কাগিসো রাবাদার লেগ স্টাম্পের ওপর হাফভলিতে ফ্লিক করে মারা ছক্কায় ছিল কর্তৃত্ব ও দাপটের মিশেল।
ইনিংসের ফাঁকে ইয়াসিরের শটগুলো নিয়েই কৌতূহল ছিল ধারাভাষ্যকারদের। সাবেক জিম্বাবুয়ে পেসার পমি মবঙ্গা যেমন ইয়াসিরকে বলছিলেন, ‘তুমি আজ অনেকগুলো দৃষ্টিনন্দন শট খেলেছ। তোমার কোনটি বেশি পছন্দ ছিল?’ ইয়াসির পুল কিংবা ফ্লিক—কোনোটিই বেছে নেননি। দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট বোলার লুঙ্গি এনগিদির করা ফুল লেংথের বলে স্ট্রেইট ড্রাইভে চার মারা শটটিই বেছে নিয়েছেন, ‘যেটা এনগিদির মাথার ওপর দিয়ে মারলাম, সেটা ভালো লেগেছে।’
নিজের প্রথম ওয়ানডে অর্ধশতক নিয়ে ইয়াসির আরও যোগ করেন, ‘অবশ্যই দারুণ অনুভূতি। দেশের হয়ে খেলছি। প্রথম অর্ধশতক পেয়েছি। ভালো লাগছে।’ তবে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও লিটন দাসকে কৃতিত্ব দিয়েছেন নিজের দাপুটে ব্যাটিংয়ের জন্য, ‘কঠিন কাজটা তামিম ভাই ও লিটন করে দিয়েছে। আমরা যারা মাঝের ওভারে খেলেছি, তাদের জন্য কিছুটা সহজ ছিল। বলের উজ্জ্বলতা কমে গিয়েছিল। উইকেটও ভালো মনে হচ্ছিল। সাকিব ভাইও দারুণ খেলছিলেন। তিনি যেভাবে খেলছিলেন, তাতে আমার কাজটাও সহজ হয়ে গেছে।’
ইনিংসের শুরুতে ইয়াসিরকে বাউন্সার মেরে আউট করতে চেয়েছিলেন প্রোটিয়া ফাস্ট বোলাররা। সে সময়টা প্রতি–আক্রমণের পথ বেছে নেন ইয়াসির। তাঁকে দেখে মনে হয়নি যে এবারই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেছেন। এ ক্ষেত্রে নিজের মানসিক প্রস্তুতির কথাটাই আলাদা করে বললেন এই তরুণ, ‘এই কন্ডিশনে কীভাবে খেলতে হবে, এ নিয়ে আমি নেটে অনুশীলন করছিলাম। কীভাবে এই ধরনের কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে হয়, সে জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। আমি জানতাম, ওরা আমাকে বাউন্সার করবে। এই গতির বলে আমি ভালো করব, আমার এমন আত্মবিশ্বাস ছিল।’