এবারের আইপিএলে একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে খেলছেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাকিব আল হাসানের পর আইপিএলে নিয়মিত খেলা দ্বিতীয় বাংলাদেশি এই বাঁহাতি পেসার পুরোনো ঠিকানা বদলে এবার যোগ দিয়েছেন দিল্লি ক্যাপিটালসে।
নতুন দলে গিয়েই নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করে দ্রুতই মধ্যমণি হয়ে উঠছেন ‘দ্য ফিজ’, যার প্রমাণ রেখেছেন প্রথম তিন ম্যাচেই দারুণ বোলিং করে। দলের হেড কোচ রিকি পন্টিংও মুগ্ধ মুস্তাফিজে। হেড কোচের কাছ থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো জিতে নিলেন পুরস্কারও।
মাঠের পারফর্মারদের অনুপ্রাণিত করতে প্রতি ম্যাচ শেষেই আলাদাভাবে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার দেন দিল্লির হেড কোচ রিকি পন্টিং। প্রথম ম্যাচের পর সবশেষ ম্যাচে কলকাতার বিপক্ষে ব্যাটিং স্বর্গে দুর্দান্ত বল করে আবারও জিতে নিয়েছেন ‘চেঞ্জড রুম ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কার। কাটার মাস্টারের হাতে সেই পুরস্কার তুলে দিয়েছেন খোদ কিংবদন্তি রিকি পন্টিং।
মুস্তাফিজের হাতে বিশেষ এ পুরস্কার তুলে দেওয়ার মুহূর্তটির ভিডিও বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দিল্লির অফিসিয়াল ফেসবুকে শেয়ার করা হয়।
এর আগে মুস্তাফিজ দিল্লির হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেন গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে। আইপিএলের নতুন এই দলটির বিপক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করেন মুস্তাফিজ।
৪ ওভার বল করে সেদিন মাত্র ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। যদিও দিল্লি গুজরাটের বিপক্ষে ম্যাচটি জিততে পারেনি; তবু প্রশংসিত হয়েছে মুস্তাফিজের বোলিং। ম্যাচ শেষে তো দলের কোচ রিকি পন্টিং সেরা পারফর্মার হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন মুস্তাফিজকেই।
দিল্লির ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের সামনে তাকে ম্যাচসেরা ঘোষণা করে পুরস্কৃত করেন দলটির হেড কোচ রিকি পন্টিং। পুরস্কার পেয়ে আবেগাপ্লুত মুস্তাফিজের আনন্দ আরও বেড়ে গেছে পুরস্কারটা পন্টিংয়ের মতো গ্রেটের হাত থেকে পেয়ে। তৃপ্তির সঙ্গে সঙ্গে অনুপ্রাণিতও বোধ করছেন মুস্তাফিজ। এবার দ্বিতীয়বারের মতো পেলেন একই সম্মাননা।
দিল্লি ক্যাপিটালসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুস্তাফিজ বলেন, ‘এটা শুধু আমার জন্য নয়, প্রতিটি খেলোয়াড়ের জন্যই অনুপ্রেরণাদায়ক।
ম্যাচ হারি আর জিতি, আপনি যদি ভালো পারফর্ম করেন, ড্রেসিংরুমে সবার সামনে ভালো ভালো কথা বা যেদিন ভালো করছেন, সেদিন তার সম্মানটা বাড়ছে। তাকে সামনে নিয়ে আসা, এটা আমার মনে হয় খুবই ভালো।’
এই মৌসুমে তিন ম্যাচ খেলেই মুস্তাফিজ জয় করে নিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির কর্মকর্তা, কোচিং স্টাফসহ বাকিদের মন। নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজিতে গেলেও নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না–তা-ও জানিয়েছেন তিনি। দলে রয়েছে পুরোনো সতীর্থ ডেভিড ওয়ার্নার ও চেতন সাকারিয়া।
এ ছাড়া প্রতিপক্ষ হিসেবেও তো পেয়েছেন এদের অনেককেই। ভালো পারফরম্যান্স বজায় রেখে নিজেকে আরও শানিত ও ক্ষুরধার করতে চান এই বাঁহাতি।
‘ভালোর তো আসলে শেষ নেই। সবসময় খেলতে নামলে আমি চেষ্টা করি নিজের বেস্টটা দেওয়ার। এখানে অনেকের সঙ্গে আমি কমবেশি খেলাধুলা করেছি। একসঙ্গে না খেললেও প্রতিপক্ষ দলে ছিল এমন, কিংবা আইপিএলের শেষ মৌসুমে চেতন সাকারিয়া ছিল, ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে দুই বছর খেলেছি। সব মিলিয়ে ভালো অভিজ্ঞতা।’
আইপিএলে এবার চার ম্যাচ খেলে দুটি জয় নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ৬ নম্বরে অবস্থান করছে দিল্লি। মুস্তাফিজ মনে করেন, তাদের দলটি দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ, তাই সামনে ভালো কিছুই হবে।
দেশবাসীর কাছে তিনি দোয়া ও দিল্লির জন্য সমর্থন চান, ‘আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন আরও ভালো খেলা উপহার দিতে পারি। আর দিল্লি ক্যাপিটালসের সঙ্গে থাকুন।
আরও ভালো খেলা যেন আমরা উপহার দিতে পারি। আমরা দুটি জিতেছি এবং দুটি হেরেছি। আমাদের ভারসাম্য খুবই ভালো। ব্যাটিং বলেন আর বোলিং বলেন, ভালো খেলোয়াড় আমাদের দলে আছে। আমাদের খুব একটা ভারসম্যপূর্ণ দল।’