টি-টোয়েন্টিতে বরাবরই ব্যর্থ বাংলাদেশ। গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আটটি আসর সম্পন্ন করল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু তাতেও এ সংস্করণে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিশেষ করে চার-ছক্কার উত্তেজনাকর ১২০ বলের ম্যাচে দলকে বড় স্কোর এনে দেয়ার মতো পাওয়ার হিটারই নেই টাইগারদের রাডারে। তবে বিষয়টিকে পুরোপুরি শারীরিক সক্ষমতা হিসেবে দেখছেন স্পিন অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান। তার মতে,
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার উদ্দেশে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দেশ ছাড়ার আগে মিরপুরে সংবাদমাধ্যমকে মেহেদী বলেন, ‘দেখুন, আমরা বাংলাদেশি, আমরা কেউই পাওয়ার হিটার না। আমরা চাইলে আন্দ্রে রাসেল বা পোলার্ড হতে পারব না। আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে যেটুকু আছে তা দিয়ে যতটা উন্নতি করা যায়।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররা দাপট দেখিয়ে চলেছে এ সংস্করণের জন্ম থেকে। যার শুরুটা করেছেন ক্রিস গেইল। নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচেই তিনি দেখা পেয়েছিলেন হাফ সেঞ্চুরির। আর বিশ্বরেক্ড গড়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন চতুর্থ ম্যাচেই। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০৫ এর উপর স্ট্রাইকরেটে ৫৭ বল মোকাবিলায় খেলেছেন ১১৭ রানের ইনিংস।
তার পরে ২০ ওভারের ম্যাচে শারীরিক শক্তির জোর দেখিয়েছেন কিরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভোর মতো ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররা। এখন সে কসরত দেখাচ্ছেন হেটমায়ার, জেসন হোল্ডার, রভম্যান পাওয়েলরা। টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিবীয়দের পাওয়ার হিটিংকে মেহেদী দক্ষতা হিসেবে নয় বরং শারীরিক কসরত হিসেবেই দেখছেন। তাই তিনি মনে করেন না, কোনো কোচের আদলে তারা পাওয়ার হিটার হয়ে উঠতে পারবেন।
এ বিষয়ে মেহেদী বলেন, ‘হ্যাঁ পাওয়ার হিটিং কোচের দরকার। তবে আপনার যে স্কিল আছে, একে কোচ হয়ত ১০ শতাংশ এগিয়ে দিবে। কিন্তু ৩০ শতাংশকে ১০০ শতাংশকে পৌঁছে দিতে পারবে না। আমরা জন্মগতভাবেই এরকম। রাতারাতি পরিবর্তন করা মনে হয় না সম্ভব।’
টাইগাল অলরাউন্ডার যোগ করেন, ‘আমরা প্রায় ১৫ বছরের মত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছি। হলে আরও আগেই হয়ে যেত। যেহেতু হচ্ছে না, আমাদের এটা নিয়ে আরও কাজ করতে হবে। পাওয়ার হিটিংয়ের কথা সবসময়ই আসে। কিন্তু এটা ঠিক না। আমাদের সামর্থ্যের বাইরে চাইলেও করতে পারবে না। এটা আপনাদের সবাইকে বিশ্বাস করতে হবে।’
টি-টোয়েন্টিতে দলের ধারাবাহিক ব্যর্থতার ফলে সিনিয়রদের বসিয়ে তরুণদের জিম্বাবুয়ে সিরিজে পরখ করে দেখতে চাইছে বিসিবি। আগামী অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। টাইগারদের এ সংস্করণে বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে আরব আমিরাত বিশ্বকাপের মতোই যেন আবার সমর্থকদের হতাশ করে না বসে। মেহেদী অবশ্য সম্ভাবনার কথা বলছেন। তার মতে, এ দলটাকে নিয়েও ভালো করা সম্ভব অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে।
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই। সম্ভব না কেন? টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাঁচটা ভালো বোলার লাগে। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের দলে বোলার আছে। যে ৭০ শতাংশ সামর্থ্য আছে ব্যাটাররা যদি এটাকে ৯০ শতাংশ করে দিতে পারত, হয়ত ফলাফল আরও পক্ষে আসতো। বিশ্বকাপে বাজে ম্যাচ কম হয়েছে। ক্লোজ ম্যাচ ছিল, ছিটকে গেছি। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে। বোলার সবসময়ই ভালো আছে।’