উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে সোজা সাইমন হার্মারের মাথার ওপর দিয়ে বিশাল এক ছক্কা হাঁকালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বুঝিয়ে দিলেন, উইকেটে এখন আমারই আধিপত্য চলবে। তবে সেই আধিপত্য বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারলেন না তিনি।
দারুণ এক ডেলিভারিতে পাল্টা জবাবটা দিতে একদমই সময় নেননি প্রায় সাত বছর পর জাতীয় দলে ফেরা ৩৩ বছর বয়সী হার্মার। তার অফ স্ট্যাম্প লাইনে পিচ করানো আচমকা টার্নিং ডেলিভারিতে ছত্রখান হয়েছে নাজমুল শান্তর স্ট্যাম্প।
শুধু শান্তকে আউট করেই থামেননি হার্মার। নিজের পরের ওভারে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুমিনুল হককেও সাজঘরের টিকিট ধরে দিয়েছেন কলপাক চুক্তি থেকে জাতীয় দলে ফিরে আসা এ অভিজ্ঞ অফস্পিনার। তার ঘুর্ণিতে বিপদে বাংলাদেশ।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৯.৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮০ রান। স্বাগতিকদের করা ৩৬৭ রানের জবাবে এখনও ২৮৭ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়কে সঙ্গ দিতে এসেছেন মুশফিকুর রহিম।
ডারবানের কিংসমিডে স্বাগতিকদের লেজের ধাক্কা সহ্য করে ৩৬৭ রানে অলআউট করার পর দ্বিতীয় সেশনে বাকি ছিল ১১ ওভার। কিন্তু সেটিও নির্বিঘ্নে কাটাতে পারেনি বাংলাদেশ দল।
ইনিংসের ১১তম ওভারের তৃতীয় বলে সাইমন হার্মারের নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ৩৩ বলে ৯ রান করা সাদমান। তার উইকেটের সঙ্গে সঙ্গেই দেওয়া হয় চা পানের বিরতি।
মেঘলা আবহাওয়ার মাঝে তৃতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছেন শান্ত ও জয়। জুটির শুরুতে কিছু ডেলিভারি হঠাৎ নিচু হওয়া ছাড়া এ দুই ব্যাটারকে তেমন সমস্যায় ফেলতে পারেননি প্রোটিয়া বোলাররা।
সাবলীল ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী করে দুইটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছেন শান্ত, পাশাপাশি মেরেছেন দুইটি চারও। তরুণ মাহমুদুল জয়ের ব্যাট থেকে এসেছে তিনটি চারের মার। তবে দারুণভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন হার্মার। পরপর দুই ওভারে ফিরিয়েছেন শান্ত ও মুমিনুলকে।
ইনিংসের ৩৫তম ওভারের প্রথম বলে হার্মারকে দ্বিতীয় ছক্কা মারেন শান্ত। এক ওভার পর ৩৭তম ওভারের প্রথম বলটিতে আচমকা এক টার্নে বোকা বনে যান শান্ত। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৮৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংস।
হার্মারের পরের ওভারের তৃতীয় বলে ডিফেন্ড করেছিলেন মুমিনুল হক। বল তার ব্যাটের ভেতরের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে জমা পড়ে সিলি পয়েন্টে দাঁড়ানো কেগার পিটারসেনের হাতে। টাইগার অধিনায়ক ৮ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি।
তবে আশার প্রতীক হয়ে খেলছেন মাহমুদুল জয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০৯ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত রয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, দলীয় তিনশ হওয়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ৮ উইকেট তুলে নিয়ে স্বস্তিতে ছিলো বাংলাদেশ দল। মনে হচ্ছিল, বেশি দূর যেতে পারবে না স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু লেজের সারির ব্যাটারদের দৃঢ়তায় শেষ দুই উইকেটে আরও ৬৯ রান পেয়েছে তারা।
স্বাগতিকদের শেষ পর্যন্ত ৩৬৭ রানে থামাতে পেরেছে বাংলাদেশ দল। ডানহাতি পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। যা দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের পেসারদের সেরা বোলিং। অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের শিকার তিন উইকেট।